অফিসের টেনশন কাটানোর সহজ টিপস


অফিসের টেনশন কাটানোর সহজ টিপস 

Office trace
পরামর্শে কলকাতার পাভলভ হাসপাতালের বিশিষ্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ডাঃ শর্মিলা সরকার।
অফিসে প্রচণ্ড কাজের চাপ? কাজের চাপের ভারে কাজেই বসছে না মন? কাজ জমে জমে কাজের পাহাড়ে পরিণত হচ্ছে? অসেচতনতায় কাজে ভুল বাড়ছে? অফিসের ঝামেলার রেশ পড়ছে ব্যক্তিগত জীবনে? কোন পথে মুক্তি বুঝতে পারছেন না?
না, আপনি একা নন। বর্তমান কর্মসংস্কৃতিতে এমন সমস্যায় বহু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মনোবিজ্ঞান বলছে, এমন বিড়ম্বনা এড়িয়ে চলতে চাইলে কয়েকটি কৌশল অবশ্যই আয়ত্তে আনতে হবে। এবার আসুন অফিসের চাপকে ফুসমন্তর বলার টিপস জেনে নেওয়া যাক—
  •  মনোযোগ বাড়ালে কাজে ভুলভ্রান্তি কম হয়। এক্ষেত্রে অফিসে পৌঁছে নিজের চেয়ারে বসে প্রথমেই পাঁচ মিনিট সময় ধরে বড় বড় শ্বাস নেওয়া-ছাড়া করুন। অথবা মনোযোগ দৃঢ় করতে ১০০ থেকে পিছনের দিকে গুনতে পারেন।
  •  অফিসে ঢুকেই কাজের একটি তালিকা তৈরি করে নিতে হবে। তালিকা সাজাতে হবে কাজের অগ্রাধিকার অনুসারে। এরপর লিস্ট অনুসারে কাজ সারতে থাকুন। একটা করে কাজ হওয়ার পর লিস্টে টিক দিন। এর মাধ্যমে কাজে শৃঙ্খলা আসবে, এক-একটা কাজ শেষ হতে থাকলে কাজের চাপ কমবে। পাশাপাশি কাজ সঠিকভাবে হয়ে গেলে নিজের উপর আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।
  •  দশটা কাজ একসঙ্গে করতে চাইলে ঘেঁটে ঘ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাই মাল্টি টাস্কিং কোনওভাবেই করা যাবে না। বরং একটা কাজ সুষ্ঠভাবে মিটিয়ে ফেলার পরই অন্য কাজে হাত দিন।
  •  চা, কফির মতো পানীয়ে ক্যাফিন থাকে। ক্যাফিন টেনশন বাড়াতে পারে। তাই কাজের সময়ে খুব বেশি পরিমাণে চা, কফি খাওয়া যাবে না।
  •  খিদে পেলে খিটখিটে লাগে, মনোযোগ কমে যায়। তাই সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে খেতে হবে। খাওয়ার পাশাপাশি দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপানও করা প্রয়োজন।
  •  তেল, ঝাল, মশলা সমৃদ্ধ মুখরোচক খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বদলে মরশুমি তাজা ফল, শাকসব্জি খাওয়া বাড়ানো দরকার।
  •  পর্যাপ্ত ঘুম হলে স্মৃতি মজবুত হয়, টেনশন কমে। তাই দিনে অন্তত পক্ষে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুম চাই ই চাই। ভালো হয় রাতে ঘুমোতে পারলে। কিন্তু এখন অবশ্য অনেকের নাইট শিফটে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে নিজের সুবিধে মতো দিনের যে কোনও সময় ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানো যেতে পারে।
  •  নিয়মিত এক্সারসাইজ করে ফিট থাকতে হবে। শারীরিকভাবে ফিট থাকলে আপনা হতেই বাড়বে আত্মবিশ্বাস। এর ফলে যে কোনও কাজে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মনোনিবেশ করা যাবে। এছাড়া নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে শরীরে চিন্তা উদ্রেককারী কর্টিজল হর্মোনের পরিমাণ কমে। ফলে অবশ্যই দুশ্চিন্তা কম হয়।
  •  অফিস আর বাড়ির মধ্যে বিরাট দূরত্ব তৈরি করতে হবে। অফিসের ঝামেলা, কাজ অফিসেই রেখে আসুন। অযথা বাড়ি বয়ে আনবেন না। উল্টোদিকে বাড়ির কোনও সমস্যার রেশও অফিসে বোগলদাবা করে নিয়ে পৌঁছাবেন না।
  •  পরিবার, কাছের বন্ধুর সঙ্গে মন খুলে কথা বললে, আড্ডা মারলে, হাসিখুশিতে মেতে থাকলে মানসিক শান্তি মেলে। তাই চেষ্টা করুন কাছের মানুষগুলির সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর।
  •  হাসলে স্ট্রেস হর্মোন কর্টিজলের পরিমাণ কমার পাশাপাশি মস্তিষ্কে এন্ডোর্ফিন বেরয়। এরফলে ভালো লাগার অনুভূতি বাড়ে। তাই টেনশন হলে হাসির ফিল্ম, ধারাবাহিক দেখতে পারেন। পড়তে ভালোবাসলে হাসির বই পড়তে পারেন।
  •  নিজের ভালো লাগার বিষয়গুলির প্রতি যত্নবান হোন। গান শুনতে ভালো লাগলে গান শুনুন, ছবি আঁকতে ভালো লাগলে আঁকুন, খেলেতে ভালো লাগলে খেলুন। যা ভালো লাগে তাই করুন। এর মাধ্যমে দুশ্চিন্তা দূরে সরিয়ে রাখা যায়।
  •  মনকে শান্ত রাখার জন্য অবসর সময়ে সফ্ট মিউজিক শুনতে পারেন।

Post a Comment

0 Comments