সংক্রমণ রুখতে দূরপাল্লার ট্রেন আটকাতে চায় রাজ্য

সংক্রমণ রুখতে দূরপাল্লার ট্রেন আটকাতে চায় রাজ্য


All Bengali Newspapers


রাজ্যের প্রথম তিন করোনা-আক্রান্তই বিদেশ ফেরত। ১৪ মার্চ থেকে বিদেশ থেকে আসার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে বলেও খবর। তবে রাজ্য প্রশাসনের কাছে এখনও চিন্তা করোনা সংক্রমণে উপরের দিকে থাকা রাজ্যগুলি থেকে ফিরে আসা বাসিন্দারা। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গগামী সব দূরপাল্লার ট্রেন বন্ধ করতে অনুরোধ করেছেন।
প্রশাসনের খবর, মূলত মহারাষ্ট্রে সোনা এবং জরির কাজ করতে যাওয়া হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুরের শ্রমিকেরা ফিরছেন। তাতে জেলায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে। সেই কারণে রেলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও স্বাস্থ্য দফতরের দল পাঠিয়ে রেলযাত্রীদের পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করেছে।
এই মুহূর্তে দেশের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মুম্বইয়ে সব থেকে বেশি। মহারাষ্ট্র সরকার পশ্চিবঙ্গের শ্রমিকদের ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে ট্রেনে করে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘স্পেশাল ট্রেন চাইলে দেয় না। এখন সবাইকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এমনিতেই আমাদের রাজ্যে করোনা আক্রান্তরা সকলেই বাইরে থেকে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে হাজার-হাজার লোক নিয়ে ট্রেন আসছে। তাই মুখ্যসচিবকে এই নির্দেশ দিয়েছি।’’ পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বড় স্টেশনগুলির নজরদারিতে খুশি নয় নবান্ন। এই পরিস্থিতিতে দূরপাল্লার যে ট্রেনগুলি রাজ্যে আসবে, সংশ্লিষ্ট স্টেশনে স্বাস্থ্য দফতর নজরদারি দল পাঠাবে।
ভিন্ রাজ্য থেকে স্পেশ্যাল ট্রেন
• মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস থেকে হাওড়া
• নাগপুর থেকে সাঁতরাগাছি
• পুনে থেকে হাওড়া
• এর্নাকুলাম থেকে গুয়াহাটি
• মারগাঁও থেকে গুয়াহাটি
• চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে সাঁতরাগাছি
• এর্নাকুলাম থেকে সাঁতরাগাছি
• সেকেন্দরাবাদ থেকে শালিমার

 মধ্য এবং দক্ষিণ রেলের পক্ষ থেকে কয়েকটি বিশেষ ট্রেন হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। সেগুলি  আজ, রবিবার বা কাল, সোমবারের মধ্যে পৌঁছবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর এবং চক্রধরপুর স্টেশনে বিশেষ ট্রেনগুলি দাঁড়াবে। সেখানে স্থানীয় প্রশাসন যাতে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, রেলের পক্ষ থেকে সেই অনুরোধও করা হয়েছে। 
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বহু শ্রমিক রাজ্যে ফিরে নিজের নিজের এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন। তাই জেলা প্রশাসনগুলিকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে নাম না করে মহারাষ্ট্র সরকারের আচরণে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘এখানে কাজের অভাব নেই। জরি, সোনার কাজের ক্লাস্টার করে দিয়েছি। পাঁচ লক্ষ লোক কাজ করে। এখানেই কাজ করতে পারেন। রোগ হলেই তাড়িয়ে দিচ্ছে, কেন বাইরে কাজ করতে যাবেন? এখানে কাজের অভাব নেই। কর্মতীর্থ, কর্মসাথী রয়েছে। দোকান করুন, দরকারে আনাজ নিয়ে বাজারে বসুন। কোনও কাজই ছোট নয়।’’
দৈনিক প্রায় ২৬ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক এ রাজ্যে আসা-যাওয়া করে। সেগুলির উপরেও নজর রাখছে প্রশাসন। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে আসা ট্রাকগুলি ছাড়া অন্য গাড়িগুলির গতিবিধিতে বাড়তি সতর্ক থাকতে চাইছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসুক। অতিরিক্ত কেন আমি নেব?’’ আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি বন্ধ করতে বার বার কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছে রাজ্য। তার পরেও তা কেন চলছে, সে ব্যাপারেও 
প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বাংলাদেশ থেকে যে ট্রাকগুলি রাজ্যে ঢুকবে, সেগুলির উপর নজরদারি রাখা হবে। পার্কিংয়ে যত সংখ্যক ট্রাক থাকতে পারে, তার বাইরে কোনও ট্রাককে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ড্রাইভার এবং সহকারীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই 
ব্যবস্থা হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments